রাসূলেনোমা আল্লামা হযরত শাহ্ সূফী ফতেহ আলী ওয়াইসী (রহঃ) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী মোবারক

এর দুই মাস পরে, হুগলী জেলার তারকেশ্বর নসিপুর রেল ষ্টেশনের নিকটবর্তী মোল্লা সিমলা গ্রামে দাওয়াতে অবস্থানকালে তিনি অসুস্থতা বোধ করেন এবং তিরোধানের আলামত বুঝিতে পারিয়া সাহাবীবর্গকে নির্দেশ দিলেন তাঁহাকে কলিকাতায় নিয়া যাওয়ার জন্য। অন্যান্য মুরিদসহ হযরত শাহ্ আহম্মদ আলী সুরেশ্বরী (রহঃ) তাঁহাকে নিয়া কলিকাতার পথে যাত্রা করেন। ট্রেন হাওড়া ষ্টেশনের নিকটবর্তী হইলে তিনি জিজ্ঞাস করেন, আকাশে রক্ত মেঘের আবির্ভাব হইয়াছে কিনা? সকলে গগণ পানে দৃষ্টিপাত করিয়া আশ্চর্য হইয়া অবলোকন করেন, যথার্থই আসমানে রুধির মেঘের সঞ্চার হইয়াছে। এই বিষয় তাঁহার কর্ণ গোচর করিলে তিনি বলিলেন, অল্পক্ষণ পরেই তিনি বেছাল হক্ব প্রাপ্ত হইয়া পর্দা গ্রহণ করিবেন। এটা তাঁহারই উঙ্গিত। এই সময় তিনি বেশ অসুস্থতাবোধ করেন এবং হযরত শাহ্ সূফী সাইয়েদ আহম্মদ আলী সুরেশ্বরী (রহঃ) কে আগাইয়া আসিতে বলিলেন। হযরত সুরেশ্বরী (রহঃ) তাঁহার নিকট আসিলে হযরত বাবা ওয়াইসী পীর ক্বেবলা (রহঃ) বুকে বুক মিলাইয়া দোয়া করিলেন। তৎপর মহব্বতের সহিত তাঁহার ছেরমোবারক হযরত সুরেশ্বরী (রহঃ) বুকে হেলান দিয়া কাঁধের উপর রাখিয়া আরাম অনুভব করিলেন। এই সময় তিনি মহাপ্রভুর ধ্যানে সম্পূর্ণ আত্মস্থ হইয়া যান।

রাসূলেনোমা আল্লামা হযরত শাহ্ সূফী সাইয়েদ ফতেহ আলী ওয়াইসী (রহঃ) ৮ই রবিউল আউয়াল ১৩০৪ হিজরী মোতাবেক বাংলা ১২৯৩ সনের ২০ শে অগ্রহায়ণ বৈকাল ৪ টার সময় ট্রেন হাওড়া ষ্টেশনের প্লাটফর্মে প্রবেশ করা মাত্রই তিনি কলেমা শাহাদত সিগ্ধ স্বরে উচ্চারণ করিয়া সারা জাহানের আপন জন পরিবারবর্গ ও ভক্ত মুরিদ অনুসারীগণকে শোক সাগরে ভাসাইয়া চির অমরালোকে আপন মাবুদের সান্নিধ্যে গমন করেন। তিনি ৬৩ বৎসর হায়াত শরীফে জাহেরান ছিলেন।

রাসূলেনোমা আল্লামা হযরত শাহ্ সূফী সাইয়েদ ফতেহ আলী ওয়াইসী (রহঃ) ইন্তেকালের পরে যথারীতি গোছল করাইয়া কাফন পড়াইয়া কলিকাতা শাহ্ ওয়ালিউল্লাহ লেনের বিবি সালেটের মসজিদে নেওয়া হয়। সেখানে আত্মীয়-স্বজন, অসংখ্য ভক্ত, মুরিদান ও জনগণ তাঁহাকে শেষবারের মত এক নজর দেখেন এবং জানাজায় শরীক হন। অতঃপর কলিকাতা মাণিকতলার দিল্লীওয়ালা গোরস্থানে হযরত ওয়াইসী পীর ক্বেবলাকে (রহঃ) যথারীতি দাফন করা হয়। ঠিক একই সময়ে বহু লোকের উপস্থিতিতে বাবা ওয়াইসী পীরক্বেবলা (রহঃ) এর পবিত্র দেহ মোবারক যথাযোগ্য মর্যাদায় দরবারে আউলিয়া সুরেশ্বর দ্বায়রা শরীফে জানাজা হওয়ার পর পূর্বাহ্নে নির্মিত মাজার শরীফে সমাহিত করা হয়। সেই হইতে আজ পর্যন্ত দরবারে আউলিয়া সুরেশ্বর দ্বায়রা শরীফে তাঁহার মাজার শরীফ সুন্দরভাবে বিদ্যমান ও যথারীতি পরিচর্যা হয় এবং ভক্তগণ উপস্থিত হইয়া জেয়ারত করিয়া ফয়েজ প্রাপ্ত হয়ে আসিতেছেন।

Additional information