পীর মুরিদ

পীর মুরিদ 


যদ্যপি হউক জানশরীফ নিশ্চিত।

পাক বলে জানে কহা নহে হরষিত ॥

হাকিকতে আহাম্মদ আলি যে মোকাম।

সাধিতে পারিলে সিদ্ধ হবে মনস্কাম ॥

যে কাজের আরম্ভেতে ফতে নাম হবে।

ফতে বই কোথা হবে পরকাল ভবে ॥

বিছমিল্লার শির পুঁঞ্জি এই ফতে নাম।

ফতে বিনা ফতে নাহি হবে মনস্কাম ॥

আজলেতে সাহা নাম আছিল স্থাপন।

পৃথিবীতে সূফী নাম হইল কীর্ত্তন ॥

আজলে আশেক ব্যাখ্যা ছিল সুবিকাশ।

ভুবনে মাশুক ব্যাখ্যা পাইল প্রকাশ ॥

আজলে মহেব নাম নিজ সিংহাসনে।

মহীতে মাহ্বুব বলে রঞ্জিত বচনে ॥

আজলে আরেফ ব্যাখ্যা ছিল প্রকাশিত।

ভবেতে মারূফ পদে ভুবন রঞ্জিত ॥

আদি মূলে ছিল যথা রূহের বাসর।

সে বাসরে নিজে ছিল খোদ পয়গাম্বর ॥

টাকা সঙ্গে আনা যুক্ত আছিল যথায়।

মধু মদ্যে মিষ্ট ভাব যাইবে কোথায় ॥

বাজারেতে আছে শত মধুর পশারী।

পশারীতে নহে মিষ্ট মধু সারি সারি ॥

যে বলে এমন খালি মুখের পাঁচালি।

নহে কোথা মিষ্ট বিনা গুড় হয় খালি ॥

مولانا روم

 (মাওলানা রোম)

چونكه ذات پيررا كردي قبول -

هم خدا درذات امد هم رسول -

درمدان ودرمبين ودر مخوان -

خواجه رادر خواجه خود محودان -

كر جدا بينى زحق اين خواخثرا -

گم كنى هم منن وهم دبها جه را -

اوليا وانبيا راحق بدان -

سومخفى باتو كر دم من عيان -

دربشر روير ش امد افتاب -

فهم كن والله اعلم بالصواب

 (চুকে জাতে পীরেরা কারদি কবুল।

হাম খোদাদার জাতে আমাদ্ হাম্ রছুল ॥

দোর মাদান ও দোর মোবিন ও দোর মাখোয়ান।

খাঁওয়জারা দর খাঁওজা খোদ মোহ্দান ॥

করে জুদাবিনি জাহক্ব এঁখাওয়াজারা।

গাম্ কুনি হাম্ মানান্ অহাম দিবাজারা ॥

আওলিয়া ও আম্বিয়ারা হক্ব বোঁদান।

র্ছেরে মুখ্ফি বাতো কারদাম মান্ইয়া ॥

দার বাসারো রোয়েরাস আম্দ আফ্তাব্।

ফাহাম্ কুন ওয়াল্লাহু আলাম বেস্ছোয়াব ॥)

যখন কবুল তুমি কৈলে পীর ধন।

তাহাতে প্রভুর জাত আর নবী তন ॥

খাজাতেই রাজা আছে মহা সমুদয়।

দেখ শুন পড় তারে জুদা হেন নয় ॥

নবী অলী হক্ব নামে হক্ব জান তায়।

ভেদ বাক্য প্রকাশিয়া কহিনু তোমায় ॥

মানুষের রূপান্তরে আসিল আফতাব।

বোঝহ খোদার বুঝ অনেক ছওয়াব ॥

কোতব এর্শাদ ছিল মূল পদ যার।

ভবেতে মোর্শেদ নাম হইল প্রচার ॥

জবরুত বাগানে সাহা আছিলেন অলী।

ভবেতে উদয় ভানু সাহে ফতে আলী ॥

উদয় হইতে ভানু তারকা সকল।

আমল আসিতে তারা করে টল টল ॥

উদয় হইতে রাত হইল বিদায়।

আন্ধারে নিদ্রিত ছিল জাগিল সবায় ॥

কিন্তু যে আজলি মরা রহিল স্বপনে।

উদয় হয়েছে ভানু কেমনে সে জানে ॥

উদয় হইয়ে দিন করিয়া রৌশন।

আসিল সামের কাল হইল গোপন ॥

গোপন হইয়া যদি গেল সেই ধনী।

পাইয়া মণির খনি রহে যেয়ে মণি ॥

কিন্তু সে মানিকে বটে চটক অপার।

ছেদিয়া চটক হল খনির বাহার ॥

কিন্তু সে চটক নহে এলাহির নূর।

মাণিকতলা দেল্লিবাগ হইল জহুর ॥

কলিকাতা মণিকতলা দেলওয়ার বাগ।

মাজার গোলজার যিনি রৌশন চেরাগ ॥

আকাশ পর্যন্ত নূর উঠে দীপ্তিমান।

অকাতরে দেখে লোক তাজ্জবে হয়রান ॥

মশাল চৌগুণ নূর হেন পরিষ্কার।

কেহ না দেখিয়া হবে জগত মাঝার ॥

চন্দ্ররূপ হতে অতি দেখিতে সুস্থির।

বাতিরূপ নহে সেই আগুন শরীর ॥

পরলোক হল যবে পৃথিবী ছাড়িয়া।

কবরে এহেন নূর উঠে চমকিয়া ॥

কতবার হেন রূপ হইল প্রকাশ।

দেখিল অনেক যারা ছিল আশ পাশ ॥

এখন পস্তায় লোক হায় কি করিনু।

থাকিতে জীবনে মোরা হায় না চিনিনু ॥

হেলায় পরশ মণি হাত হতে যায়।

হায়রে নছিব মোর মরিলে পস্তায় ॥

লোকান্তরে অকাতরে এই কেরামত।

জীবনেতে কেরামত ছিল শত শত ॥

জ্বীন ও মানুষ্য শিষ্য ছিল অগণন।

দেখিতো শতেক লোক ভাবুক যেজন ॥

এত্তেহাদি তাওয়াজ্জুতে করেন তালিম।

এক তাওয়াজ্জুতে ফল যুগের আজিম ॥

দৃষ্টিপাতে ঝরে পাপ অজুদ বিমল।

কলব দর্পন রূপ জ্যোতে ঝলমল ॥

এক নজরেতে ছিল যুগের হাছেল।

পরলোক হয়ে লোকে করিল কামেল ॥

এখনও ভাবুক যদি জেয়ারতে যায়।

অপূর্ব্ব মাণিক পায় মাণিক তলায় ॥

পেয়ারের গাছ পাশে মেন্দীর তলায়।

পেয়ারে মেন্দীর রঙ্গ ভাবুকে লাগায় ॥

এমন মেন্দীর রঙ্গ পাতার তাছির।

লাগাইবা মাত্র লাগে যেমন আবির ॥

কুসুমের রঙ্গ তার নহে সমতুল।

গন্ধরাজ বিমোহিত সুগন্ধে আকুল ॥

এইসব মেন্দী পাতা হয়ে হরষিত।

সুরেশ্বরে নানাবিধ গাইতেছে গীত ॥

সে গীতে উদাস হয় ভাবুকের মন।

সে ভাবে সতত হয় ভাবের কীর্ত্তন ॥

ভাবুকের সেই মেন্দী লাগাইবা কালে।

পড়েছিল এক বিন্দু লাগানু কপালে ॥

কপালে লাগাতে মেন্দী মাথা ধরে তায়।

সে দরদে কাঁদি আমি করে হায় হায় ॥

সকল ভাবুক চাহে সে মেন্দী লাগাই।

আমি বলি বাঁচি নহে কেমনে ছাড়াই ॥

ছাড়াইতে চাহি বটে লেগে বসে দাগ।

আচম্বিতে সে দরদে ফুটিল দেমাগ ॥

দেমাগ হইল খালি রহে মাত্র খোল।

সেই খোলে রোদনেতে বাজাই তবল ॥

শুনিয়া তবল মম কেহ পেরেশান।

রোদন দেখিয়া কত হাসিয়া হয়রান ॥

আমিও হাসিনু কত কান্দনে আমার।

আমার কান্দনে লোক কান্দে জারে জার ॥

কতেক হাসিনু আমি করে খলখল।

সে হাসনে কাঁদি শুধু চক্ষে বহে জল ॥

সে জলে আগুন জ্বলে ধাঁ ধাঁ ঘোরতর।

সে অনলে জ্বলে যায় সাগর লহর ॥

জ্বলিল সকল জল আর কিছু নাই

কেবল রহিনু আমি একেলা কানাই ॥

তখন ভাবিনু আমি, আমি একজন।

আমি নাহি আমিতে যে, সে আমি কেমন ॥

একা আমি ছিনু আমি হৈনু দুইজন।

দুই আমি একাযুক্তে হনু তিন তন ॥

চতুর্থ আমির মধ্যে যখন আমি যাই।

সব আমি খ্যান্ত দিয়া হইনু কানাই ॥

 

 

 

 

Additional information