পীর মুরিদ
- Details
- Hits: 2698
পীর মুরিদ
যদ্যপি হউক জানশরীফ নিশ্চিত।
পাক বলে জানে কহা নহে হরষিত ॥
হাকিকতে আহাম্মদ আলি যে মোকাম।
সাধিতে পারিলে সিদ্ধ হবে মনস্কাম ॥
যে কাজের আরম্ভেতে ফতে নাম হবে।
ফতে বই কোথা হবে পরকাল ভবে ॥
বিছমিল্লার শির পুঁঞ্জি এই ফতে নাম।
ফতে বিনা ফতে নাহি হবে মনস্কাম ॥
আজলেতে সাহা নাম আছিল স্থাপন।
পৃথিবীতে সূফী নাম হইল কীর্ত্তন ॥
আজলে আশেক ব্যাখ্যা ছিল সুবিকাশ।
ভুবনে মাশুক ব্যাখ্যা পাইল প্রকাশ ॥
আজলে মহেব নাম নিজ সিংহাসনে।
মহীতে মাহ্বুব বলে রঞ্জিত বচনে ॥
আজলে আরেফ ব্যাখ্যা ছিল প্রকাশিত।
ভবেতে মারূফ পদে ভুবন রঞ্জিত ॥
আদি মূলে ছিল যথা রূহের বাসর।
সে বাসরে নিজে ছিল খোদ পয়গাম্বর ॥
টাকা সঙ্গে আনা যুক্ত আছিল যথায়।
মধু মদ্যে মিষ্ট ভাব যাইবে কোথায় ॥
বাজারেতে আছে শত মধুর পশারী।
পশারীতে নহে মিষ্ট মধু সারি সারি ॥
যে বলে এমন খালি মুখের পাঁচালি।
নহে কোথা মিষ্ট বিনা গুড় হয় খালি ॥
مولانا روم
(মাওলানা রোম)
چونكه ذات پيررا كردي قبول -
هم خدا درذات امد هم رسول -
درمدان ودرمبين ودر مخوان -
خواجه رادر خواجه خود محودان -
كر جدا بينى زحق اين خواخثرا -
گم كنى هم منن وهم دبها جه را -
اوليا وانبيا راحق بدان -
سومخفى باتو كر دم من عيان -
دربشر روير ش امد افتاب -
فهم كن والله اعلم بالصواب
(চুকে জাতে পীরেরা কারদি কবুল।
হাম খোদাদার জাতে আমাদ্ হাম্ রছুল ॥
দোর মাদান ও দোর মোবিন ও দোর মাখোয়ান।
খাঁওয়জারা দর খাঁওজা খোদ মোহ্দান ॥
করে জুদাবিনি জাহক্ব এঁখাওয়াজারা।
গাম্ কুনি হাম্ মানান্ অহাম দিবাজারা ॥
আওলিয়া ও আম্বিয়ারা হক্ব বোঁদান।
র্ছেরে মুখ্ফি বাতো কারদাম মান্ইয়া ॥
দার বাসারো রোয়েরাস আম্দ আফ্তাব্।
ফাহাম্ কুন ওয়াল্লাহু আলাম বেস্ছোয়াব ॥)
যখন কবুল তুমি কৈলে পীর ধন।
তাহাতে প্রভুর জাত আর নবী তন ॥
খাজাতেই রাজা আছে মহা সমুদয়।
দেখ শুন পড় তারে জুদা হেন নয় ॥
নবী অলী হক্ব নামে হক্ব জান তায়।
ভেদ বাক্য প্রকাশিয়া কহিনু তোমায় ॥
মানুষের রূপান্তরে আসিল আফতাব।
বোঝহ খোদার বুঝ অনেক ছওয়াব ॥
কোতব এর্শাদ ছিল মূল পদ যার।
ভবেতে মোর্শেদ নাম হইল প্রচার ॥
জবরুত বাগানে সাহা আছিলেন অলী।
ভবেতে উদয় ভানু সাহে ফতে আলী ॥
উদয় হইতে ভানু তারকা সকল।
আমল আসিতে তারা করে টল টল ॥
উদয় হইতে রাত হইল বিদায়।
আন্ধারে নিদ্রিত ছিল জাগিল সবায় ॥
কিন্তু যে আজলি মরা রহিল স্বপনে।
উদয় হয়েছে ভানু কেমনে সে জানে ॥
উদয় হইয়ে দিন করিয়া রৌশন।
আসিল সামের কাল হইল গোপন ॥
গোপন হইয়া যদি গেল সেই ধনী।
পাইয়া মণির খনি রহে যেয়ে মণি ॥
কিন্তু সে মানিকে বটে চটক অপার।
ছেদিয়া চটক হল খনির বাহার ॥
কিন্তু সে চটক নহে এলাহির নূর।
মাণিকতলা দেল্লিবাগ হইল জহুর ॥
কলিকাতা মণিকতলা দেলওয়ার বাগ।
মাজার গোলজার যিনি রৌশন চেরাগ ॥
আকাশ পর্যন্ত নূর উঠে দীপ্তিমান।
অকাতরে দেখে লোক তাজ্জবে হয়রান ॥
মশাল চৌগুণ নূর হেন পরিষ্কার।
কেহ না দেখিয়া হবে জগত মাঝার ॥
চন্দ্ররূপ হতে অতি দেখিতে সুস্থির।
বাতিরূপ নহে সেই আগুন শরীর ॥
পরলোক হল যবে পৃথিবী ছাড়িয়া।
কবরে এহেন নূর উঠে চমকিয়া ॥
কতবার হেন রূপ হইল প্রকাশ।
দেখিল অনেক যারা ছিল আশ পাশ ॥
এখন পস্তায় লোক হায় কি করিনু।
থাকিতে জীবনে মোরা হায় না চিনিনু ॥
হেলায় পরশ মণি হাত হতে যায়।
হায়রে নছিব মোর মরিলে পস্তায় ॥
লোকান্তরে অকাতরে এই কেরামত।
জীবনেতে কেরামত ছিল শত শত ॥
জ্বীন ও মানুষ্য শিষ্য ছিল অগণন।
দেখিতো শতেক লোক ভাবুক যেজন ॥
এত্তেহাদি তাওয়াজ্জুতে করেন তালিম।
এক তাওয়াজ্জুতে ফল যুগের আজিম ॥
দৃষ্টিপাতে ঝরে পাপ অজুদ বিমল।
কলব দর্পন রূপ জ্যোতে ঝলমল ॥
এক নজরেতে ছিল যুগের হাছেল।
পরলোক হয়ে লোকে করিল কামেল ॥
এখনও ভাবুক যদি জেয়ারতে যায়।
অপূর্ব্ব মাণিক পায় মাণিক তলায় ॥
পেয়ারের গাছ পাশে মেন্দীর তলায়।
পেয়ারে মেন্দীর রঙ্গ ভাবুকে লাগায় ॥
এমন মেন্দীর রঙ্গ পাতার তাছির।
লাগাইবা মাত্র লাগে যেমন আবির ॥
কুসুমের রঙ্গ তার নহে সমতুল।
গন্ধরাজ বিমোহিত সুগন্ধে আকুল ॥
এইসব মেন্দী পাতা হয়ে হরষিত।
সুরেশ্বরে নানাবিধ গাইতেছে গীত ॥
সে গীতে উদাস হয় ভাবুকের মন।
সে ভাবে সতত হয় ভাবের কীর্ত্তন ॥
ভাবুকের সেই মেন্দী লাগাইবা কালে।
পড়েছিল এক বিন্দু লাগানু কপালে ॥
কপালে লাগাতে মেন্দী মাথা ধরে তায়।
সে দরদে কাঁদি আমি করে হায় হায় ॥
সকল ভাবুক চাহে সে মেন্দী লাগাই।
আমি বলি বাঁচি নহে কেমনে ছাড়াই ॥
ছাড়াইতে চাহি বটে লেগে বসে দাগ।
আচম্বিতে সে দরদে ফুটিল দেমাগ ॥
দেমাগ হইল খালি রহে মাত্র খোল।
সেই খোলে রোদনেতে বাজাই তবল ॥
শুনিয়া তবল মম কেহ পেরেশান।
রোদন দেখিয়া কত হাসিয়া হয়রান ॥
আমিও হাসিনু কত কান্দনে আমার।
আমার কান্দনে লোক কান্দে জারে জার ॥
কতেক হাসিনু আমি করে খলখল।
সে হাসনে কাঁদি শুধু চক্ষে বহে জল ॥
সে জলে আগুন জ্বলে ধাঁ ধাঁ ঘোরতর।
সে অনলে জ্বলে যায় সাগর লহর ॥
জ্বলিল সকল জল আর কিছু নাই
কেবল রহিনু আমি একেলা কানাই ॥
তখন ভাবিনু আমি, আমি একজন।
আমি নাহি আমিতে যে, সে আমি কেমন ॥
একা আমি ছিনু আমি হৈনু দুইজন।
দুই আমি একাযুক্তে হনু তিন তন ॥
চতুর্থ আমির মধ্যে যখন আমি যাই।
সব আমি খ্যান্ত দিয়া হইনু কানাই ॥