রাসূলেনোমা আল্লামা হযরত শাহ্ সূফী ফতেহ আলী ওয়াইসী (রহঃ) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী মোবারক

এরপর নূরনবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) তাঁহার কাছে তাশরিফ আনেন এবং তাঁহাকে অসীম স্নেহে নিজ পুত্র সম্ভাষণে আপন পূতবক্ষে জড়াইয়া ব্যক্তিগত ভাবে আপন পবিত্র ও মহার্ঘ নিসবত দান করিয়া উভয় জগতে মহাভাগ্যবান করেন। পরবর্তী সময়ে নবীজী পুনঃ আবির্ভূত হইয়া এরশাদ ফরমান যে, যখনই তিনি ইচ্ছা করিবেন তখনই নিদ্রা ও জাগরণে নবী পাক (সাঃ) এর জিয়ারত লাভ করিবেন। সে অবধি তিনি “রাসূলেনোমা” উপাধিতে প্রসিদ্ধি লাভ করেন। সব সময় তিনি রাসূলেপাক (সাঃ) এর দর্শন লাভ করিতেন। তিনি তাঁহার বহু মুরিদকে রাসূলে পাক (সাঃ) এর দর্শন লাভ করাইয়া দিয়াছেন। হযরত রাসূলে করিম (সাঃ) এর দর্শন লাভের মানসে তাঁহার নিকট আরজ পেশ করিলে তিনি দয়াপরবশ হইয়া তাহাদের মনোবাসনা পূর্ণ করিতেন। আধ্যাত্মিক বা রূহানী জগতে ওয়াইসীয়া নামে অতিশয় মর্যদাপূর্ণ ও প্রবলতম আধ্যাত্মিক রূহানী শক্তি সম্পন্ন খোদা প্রাপ্তির একটি অতি উত্তম ত্বরিকা রহিয়াছে। অতি অল্প সংখ্যক আউলিয়া এটা লাভ করিয়াছেন। কেহ স্বেচ্ছায়, আকাঙ্খা বা প্রার্থনা করিয়া এটা লাভ করিতে পারে না। এটা শুধুমাত্র আল্লাহ্ তায়ালার এনায়েত, ফরজ ও রহমতের দ্বারা লাভ করা যায়। সম্পূর্ণ রূপেই তা আজলী তকদিরি রূহানী সম্পর্ক। রাসূলেনোমা হযরত ফতেহ্ আলী ওয়াইসী (রহঃ) হযরত ওয়ায়েস করণী (রহঃ) হইতে রূহানী দীক্ষা ও শক্তি লাভ করিয়া ওয়াইসীয়া ত্বরিকার ফয়েজ, নেজবত ও খেলাফত লাভ করিয়াছিলেন।

এছাড়া তিনি মাসুমীয়া ও সোহরাওয়ার্দীয়া ত্বরিকার খেলাফতও লাভ করেন। তিনি সর্বমোট ৭টি ত্বরিকা যথা- কাদেরিয়া, চিশ্তীয়া, মোজাদ্দেদীয়া, নকশেবন্দীয়া, ওয়াইসীয়া, মাসুমীয়া ও সোহরাওয়ার্দীয়া ত্বরিকার খেলাফত লাভ করেন এবং এই সাতটি ত্বরিকাতেই তিনি মুরিদ করিতেন।

রাসূলেনোমা আল্লামা হযরত শাহ্ সূফী সাইয়েদ ফতেহ্ আলী ওয়াইসী (রহঃ) মারেফাতের উচ্চ শিখরে উন্নীত হইয়া খোদাতায়ালার অসীম রহমতে প্রথমত তিনি কুতুবুল এরশাদ নামক উচ্চ পদটি লাভ করিয়াছিলেন। অতঃপর ক্রমশ আধ্যাত্মিকতার আরো উচ্চ শিখরে আরোহণ করিয়া ফরদিয়াতের মোকামে উন্নীত হইয়া ফরদ হইয়াছিলেন। পরে তিনি সমধিক উন্নত হইয়া কুতবুল ওয়াদত নামক অতি সুউচ্চ পদ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। একদা রমজান মাসে হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কর্তৃক তিনি বঙ্গ, আসাম ও বিহারের প্রধান কুতুবুল আলম পদ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। এরপর তিনি গাউসে জামান পদ প্রাপ্ত হন। তিনি মুহূর্তের মধ্যে আপন অস্তিত্ব ভুলিয়া হযরত রাসূলে পাক (সাঃ) এর মধ্যে একাকার হইয়া যাইতেন বলিয়া তাঁহাকে ‘ফানাফির রাসূল’ নামে অলংকৃত করা হয়।

Additional information