আধ্যাত্মিক জগতে পদমর্যাদা

আধ্যাত্মিক জগতে পদমর্যাদা

হযরত মাওলানা শাহ্ সূফী সাইয়েদ ফতেহ্ আলী ওয়াইসী ক্বেবলা (রহঃ) আখেরী নবী হযরত আহম্মদ-মুজতবা মোহাম্মদ মুস্তফা হুজুরের (দঃ) তাঁহার পরিবারবর্গগণের (রাজিঃ), আহলে বায়াতগণের (রাজিঃ) এবং হযরত খাজা খেজরের (দঃ) ও হজরত ওয়েস করণীর নিকট হইতে রূহানী নিসবত লাভ করিয়া ‘ওয়াইসী’ নামে বিভূষিত হন।

এইরূপে রূহানী ভাবে তিনি সকলের দীক্ষা লাভ করিয়াছিলেন বলিয়া ‘নিস্বতে-জাময়ার’ অধিকারী হন।

বিশেষ ভাবে হযরত নূর নবী রাসূল হুজুর পাকের (দঃ) স্নেহদৃষ্টি লাভ করিয়া তিনি ঘুমে ও জাগরনে সতত মূহুর্তে তাঁহার জিয়ারত ও নৈকট্য লাভ করিতেন বলিয়া ‘রাসূলেনোমা’ নামে অভিহিত হন।

তিনি কাদেরীয়া, চিশতীয়া, নকশবন্দীয়া ও মুজাদ্দেদীয়া এই চার ত্বরিকাতেই রূহানী ও প্রকাশ্য ভাবে বয়েত হইয়া উচ্চশ্রেণীর খিলাফত প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। এইজন্য তিনি ‘কাদেরী, চিশতী, নকশবন্দী ও মুজাদ্দেদী পীর’ বলিয়া খ্যাত। এই চার ত্বরিকাতে তিনি বায়াত করতেন।

তিনি ঈমাম হযরত নোমান আবু হানিফার (রাজিঃ) কাছ হইতে রূহানী নিসবত অর্জন করিয়া ‘হানাফি পীর’ হইয়াছিলেন।

মারেফতের মার্গে উন্নীত হইয়া খোদাতালার অসীম অনুগ্রহে প্রথমঃ তিনি ‘কুতবুল-এরশাদ’ নামের উচ্চ শিখরে আরোহন করিয়া ফরদিয়াতের মোকামে উন্নতি হইয়া ‘ফরদ’ হইয়াছিলেন। এই ‘ফরদিয়াতে কুতবুল-এরশাদ’ কয়েক শতাব্দী পর কেহ কেহ পাইয়া থাকেন। ইহা অতি বিরল।

পরে তিনি সমধিক উন্নত হইয়া ‘কুতবুল ওয়াদাত’ নামক অতি সুউচ্চ পদ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। তিনি নিজেকে গুপ্ত রাখিতে প্রয়াস করিতেন এবং আপন অবস্থা হাল ও পদমর্যাদা সারা জীবন ধরিয়া গোপন রাখিয়া গিয়াছেন ও ক্রমশঃ গোপন রাখিতেছেন। এই পদের চরিত্রই হইল প্রচ্ছন্ন রাখা। হযরত রসুলুল্লাহ্ হুজুর (দঃ) কর্তৃক একদা রমজান মাসে তিনি বঙ্গ, আসাম ও বিহারের প্রধান ‘কুতবুল আলম’ পদ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। ইহার পরই তিনি গাউছে জামান হইয়াছিলেন।

তিনি কলিকাতার মত বিলাসিতার লীলা ভূমিতেও ‘সূফী’ নামে বিভূষিত হন। আপামর সকলেই তাঁহাকে হযরত সূফী সাহেব বলিয়া পরম সমাদরে ডাকিতেন। তাঁহার নিড়াম্বর ও নিরহঙ্কার জীবন দৃষ্টান্ত প্রাথমিক ইসলামিক যুগের পবিত্র মদিনার মহান সূফীগণের কথা স্মরণ করাইয়া দিয়াছিল।

হযরত রাসূলের করিম হুজুর পাকের (দঃ) প্রতি তিনি অসীম অনন্ত, আকুল ব্যাকুল প্রেমিক পাগল ছিলেন। মূহুর্তেই ও মূহুমূহু তিনি ‘ফানাফির রাসূল’ হইয়া যাইতেন। আপন অস্তিত্ব ভুলিয়া হযরত নূরী নবী আহম্মদ মুজতবা মোহাম্মদ মুসতফা হুজরের (দঃ) মধ্যে একাকার হইয়া যাইতেন বলিয়া তাঁহাকে ‘ফানাফির রাসূল দরবেশ’ নামে অলংকৃত করা হয়।

রাসূল প্রেমের বিদ্যুৎ বহ্নি প্লাবনের ঢল তাঁহার বিখ্যাত ‘দিওয়ানে ওয়াইসী’ নামক মহাকাব্য গ্রন্থের পাতায় পাতায় স্বর্ণাক্ষরে আজও লেখা আছে।

Additional information