ত্বরিকায়ে ওয়াইসীয়া

ত্বরিকায়ে ওয়াইসীয়াঃ

হযরত শাহ্ সূফী সাইয়েদ ফতেহ আলী ওয়াইসী (রহঃ) হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর প্রেমে সব সময় বিভোর থাকিতেন। তিনি তাঁহার প্রেম ব্যতীত কোন কিছুই উপলব্ধি করতে পারতেন না। তিনি যে ১৭৯টি গজল ও ২৩টি কাসিদা সমন্বিত “দিওয়ানে ওয়াইসী” কাব্য রচনা করেন সেগুলি সবই পয়গম্বর হযরত মোহাম্মদকে (সাঃ) নিবেদিত। হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কে তিনি কিরূপ ভালবাসতেন তা এই পুস্তকে ব্যক্ত করেছেন যা ভাষার অতীত, এসবই মনের অনুভব ও আকুতির ব্যাপার। পয়গম্বর হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) অত্যন্ত প্রীত হয়ে সরাসরি তাকে বিশেষ এক নেসবত প্রদান করেন। যাকে নেসবসে ওয়াইসী বলা হয়, যে ফায়েজের মাধ্যমে তিনি হুজুর পাক (সাঃ) সরাসরি নিজে দেখতেন এবং ভক্তদের দেখাতে পারতেন। এই বিশেষ ফায়েজ পাওয়ার জন্য বা নবী পাককে সরাসরি তাঁহার মাধ্যমে খালি চোখে দেখার জন্য সে যুগে সমগ্র পৃথিবী হতে মানুষ তাঁহার কাছে ছুটে এসেছিল এর বহু ইতিহাস আছে।

খলিফা হযরত আবু বকর (রহঃ), হযরত উমর (রহঃ), হযরত ওসমান (রহঃ) এবং হযরত আলী (রহঃ) কর্তৃক নেসবত প্রাপ্ত হযরত ওয়ায়েস করনি (রহঃ) প্রতি ভালবাসা ও উভয়ের প্রীতি সম্পর্কের ইতিহাস অবিস্মরনীয়।

হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) মহা মূল্যবান জোব্বা মোবারকের কি অর্ন্তনিহিত রহস্য ছিল তা জাহেরী জগতে আজও রহস্যবৃত। হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) প্রদত্ত এই মহা সম্পদ তাঁহার খলিফাদের মাধ্যমে হযরত ওয়ায়েস কারনি (রহঃ) কে এক নিভৃত স্থানে রক্ষা করার জন্য বা হেফাজত করার জন্য পাঠিয়ে ছিলেন, এক অনাগত অধ্যাত্ম পুরুষকে প্রদানের জন্য। হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কে খুশী করে হযরত ফতেহ্ আলী ওয়াইসী ক্বিবলা কা’বা সেই ভাগ্যবান পুরুষ যিনি শেষ জামানায় মহামূল্যবান রক্ষিত সম্পদ লাভ করবেন। যার অর্থ হল হুজুর (সাঃ) কতৃক মহা মর্যাদা অর্জন করা। সমগ্র বিশ্বে ওয়াইসী নেসবতের ভক্তরা পরিব্যাপ্ত রয়েছেন। নেসবতে ওয়াইসী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এক রহস্যময় দান, যার অর্থ কেবল হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) স্বয়ং অবগত। এর দুর্গম অর্থ ব্যাখ্যা করা অসম্ভব।

বহু ইতিহাস আছে, যারা এই পথের পথিক তারা জানেন, যুগে যুগে হুজুর (সাঃ) কে খুশী করে অনেক মহাপুরুষ অনেক কিছুই পেয়েছেন। কিন্তু হযরত ওয়ায়েসী করণী (রহঃ) কাছে গচ্ছিত এই সম্পদ কাউকে দান করেন নি। একমাত্র পৃথিবীর বুকে হযরত শাহ্ সূফী ফতেহ্ আলী ওয়াইসী (রহঃ) এই ভাগ্যবান সম্পদের অধিকারী হলেন অর্থাৎ সব কিছুই তিনি পেলেন। তাঁহার এক মহান খলিফার মতে এই সম্পদ পাওয়ার অর্থ হযরত ইমাম মেহেদী (আঃ) এর ঝান্ডা বহনের তিনি ইঙ্গিত বহনকারী।

পয়গম্বর হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এই বিশ্ব থেকে বিদায় নেবার পূর্বে তিনি তাঁহার খলিফাদের মাধ্যমে হযরত ওয়ায়েস কারনি (রহঃ) কে তাঁহার পবিত্র খেলকা মোবারক প্রদান করেছিলেন। যদিও তাঁহার সমস্ত সাহাবিগণ ও খলিফারা তাঁহার সম্মুখে উপস্থিত ছিলেন তথাপি তিনি তাঁহার বিশেষ খেলকা মোবারক হযরত ওয়ায়েস কারনির কেন দিয়েছিলেন? হুজুর (সাঃ) খলিফাগণ বা সাহাবীগণকে কেন দিলেন না তাঁহার রহস্য তিনিই জানেন। তবে গবেষনার মাধ্যমে বোঝা যায়, তিনি জানতেন খেলাফায়ে রাসেদীনেরা তাঁহার মত পথ প্রচারে সমগ্র বিশ্বে ব্যস্ত থাকবে। এই মহামূল্যবান সম্পদকে রক্ষা করার জন্য একজন বিশেষ রক্ষকের প্রয়োজন। ব্যস্ততার মধ্যে তাঁহার খলিফাদের দ্বারা তা সম্ভব হবে না, তাই তিনি হযরত ওয়ায়েস কারনীর কাছে তাঁহার এই মহামূল্যবান সম্পদকে নিভৃতে রক্ষা করে জন্য আখেরী জামানা পর্যন্ত হেফাজত করার জন্য পাঠিয়ে ছিলেন। তিনি মনে করেছিলেন হযরত ওয়ায়েস কারনীই (রহঃ) হচ্ছেন যোগ্য ব্যক্তি। তবে এই খেলকা মোবারক (জোব্বা) কালের প্রবাহে হযরত শাহ্ সূফী সাইয়েদ ফতেহ্ আলী ওয়াইসী (রহঃ) হুজুরের কাছে পৌছেছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। এই ত্বরিকার মাধ্যমে আল্লাহ্ রাসূলের কাছে পৌছাবার রাস্তা অনেক সংক্ষিপ্ত।

Additional information